২০২৫ সালের বর্ষাকালে সারা দেশজুড়ে বৃষ্টির পরিমাণ অনেকটাই বেশি। যার প্রভাবে উত্তরপ্রদেশ, বিহার, উড়িষ্যা, হরিয়ানা, দিল্লি সহ একাধিক রাজ্যে দেখা দিয়েছে জলমগ্নতা, বন্যা পরিস্থিতি এবং রাস্তা-ঘাটে চলাচলে সমস্যা। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে টানা Self ঘোষণা করা হয়েছে।
কোন রাজ্যে কবে থেকে ছুটি?
রাজ্য | ছুটির সময়কাল | কারণ |
---|---|---|
উত্তরপ্রদেশ (মিরাট) | ১৬ জুলাই – ২৩ জুলাই | বর্ষা ও কांवড় যাত্রা উপলক্ষে, প্রশাসনিক ব্যবস্থা সহজ করতে |
বিহার | ১৭ জুলাই – ২২ জুলাই | গঙ্গার তীরবর্তী অঞ্চলে জল বাড়ায়, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কারণে |
ওড়িশা | ১৫ জুলাই – ২০ জুলাই | ধ্বস ও বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সম্ভাবনা |
হরিয়ানা ও পাঞ্জাব | ১৮ জুলাই – ২৪ জুলাই | অতিভারী বৃষ্টির সতর্কতা |
এছাড়াও কয়েকটি রাজ্যে স্কুলকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের জন্য ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা: পশ্চিমবঙ্গে সরকারি কর্মীদের ছুটি বাতিল!
অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গে এই মুহূর্তে স্কুল-কলেজে ছুটির বিষয়ে এখনো কোনো সরকারি ঘোষণা না হলেও, কলকাতা পুরসভা এবং বিভিন্ন জেলা প্রশাসনের কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। বিশেষ করে নিকাশি বিভাগের প্রায় ১১০০ কর্মী ও শতাধিক ইঞ্জিনিয়ার এখন থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত কোনো ছুটি নিতে পারবেন না।
কারা ছুটির আওতাভুক্ত?
👉 কলকাতা পুরসভা, হাওড়া, বিধাননগর, দুর্গাপুর সহ সব পুরনিগমে
👉 নিকাশি বিভাগের কর্মী ও সিভিল ইঞ্জিনিয়ার
👉 দমকল বাহিনীর কর্মী
👉 বৈদ্যুতিক মেরামতির টেকনিশিয়ান ও জরুরি বিভাগের স্টাফ
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান,
“জল জমার সমস্যাকে গুরুত্ব দিয়ে দ্রুত নিষ্কাশনের জন্য সব কর্মীকে প্রস্তুত থাকতে হবে। দুর্গাপুজো সামনে, শহরে যাতে জল দাঁড়ায় না সেই প্রস্তুতি এখন থেকেই নেওয়া দরকার।”
কেন ছুটি বাতিল?
১. টানা বৃষ্টির প্রভাবে জল জমার সমস্যা
গত এক মাস ধরে কলকাতা ও আশেপাশে টানা বৃষ্টি চলছে। যার ফলে চিহ্নিত ওয়াটার পকেট এলাকাগুলি, যেমন – বেহালা, কালীঘাট, যাদবপুর, বাগুইআটি এলাকায় জল জমে রয়েছে।
২. দুর্গাপুজোর প্রস্তুতি শুরু
পূজোর আগে নাগরিকদের দুর্ভোগ কমাতে জুলাই থেকেই নিকাশি কর্মীদের ছুটি বন্ধ করা হয়েছে। কারণ অতীতে পুজোর সময়ে বৃষ্টির জেরে মণ্ডপ ও রাস্তায় জল জমার ঘটনা বহুবার ঘটেছে।
কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে?
✅ প্রতিটি জল জমা এলাকার জন্য জোনাল অফিসার নিযুক্ত
✅ ২৪ ঘণ্টা নিয়ন্ত্রণকক্ষ (Control Room) চালু
✅ প্রতিটি পাম্পিং স্টেশন পরীক্ষায় নিয়োজিত ইঞ্জিনিয়ার
✅ অতিরিক্ত ড্রেন পাম্প, সাবমারসিবল পাম্প, জেনারেটর রেডি রাখা হয়েছে
স্কুল-কলেজ ছুটি হলে কবে ঘোষণা?
পশ্চিমবঙ্গে এখনও পর্যন্ত রাজ্য সরকারের তরফে স্কুল-কলেজে ছুটির ঘোষণা হয়নি। তবে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত কিছু স্কুল আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। যদি বৃষ্টির পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়, তবে কলকাতা ও অন্যান্য শহরেও স্কুল ছুটির সম্ভাবনা রয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রীর জরুরি বার্তা
বৃষ্টির সময় নিরাপত্তার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাধারণ নাগরিকদের উদ্দেশ্যে বলেন:
“বৃষ্টির সময় গাছের নিচে দাঁড়াবেন না। বৈদ্যুতিক খুঁটি বা তারে হাত দেবেন না। শিশু ও বৃদ্ধদের বাড়ির বাইরে না যেতে অনুরোধ করছি।”
জরুরি নির্দেশ সংক্ষেপে
বিষয়ের নাম | নির্দেশ |
---|---|
নিকাশি বিভাগ | ছুটি বাতিল, অক্টোবরে পুজো শেষ না হওয়া পর্যন্ত কর্মরত থাকতে হবে |
দমকল বিভাগ | ২৪x৭ প্রস্তুত থাকতে হবে, বিশেষ করে জল জমার সময় |
বৈদ্যুতিক কর্মী | যেকোনো বিদ্যুৎ বিভ্রাট বা শর্টসার্কিটে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে |
নাগরিকদের জন্য | বাইরে অপ্রয়োজনে বের না হওয়া, সুরক্ষা বজায় রাখা |
এই বছর বর্ষাকালে সারা দেশে বৃষ্টির মাত্রা অনেক বেশি। উত্তর ভারতে যেখানে স্কুল-কলেজে টানা ছুটি দেওয়া হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে সেখানেই সরকারি পরিষেবা ও জনসুরক্ষা রক্ষা করতে নিকাশি ও জরুরি বিভাগের কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
পুজোর আগে এই পদক্ষেপ শহরবাসীর স্বস্তি এবং নিরবিচ্ছিন্ন জল নিষ্কাশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে।
FAQs
প্রশ্ন: পশ্চিমবঙ্গে স্কুল কবে ছুটি হতে পারে?
উত্তর: এখনো পর্যন্ত ঘোষণা হয়নি, তবে পরিস্থিতি খারাপ হলে জেলা ভিত্তিক সিদ্ধান্ত হতে পারে।
প্রশ্ন: কারা ছুটি নিতে পারছেন না?
উত্তর: পুরসভা, দমকল, বৈদ্যুতিক, এবং নিকাশি বিভাগের কর্মীরা ছুটি পাবেন না।
প্রশ্ন: এই সিদ্ধান্ত কি পুজোর প্রস্তুতির জন্যও?
উত্তর: হ্যাঁ, বর্ষা ও পুজোর সময় জল জমার সমস্যা এড়াতেই এই পদক্ষেপ।