HDFC Bank Scholarship 2025: বর্তমানে ভারতের মাটিতে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের জন্য দরকার হচ্ছে প্রচুর পরিমাণে অর্থের। ভারতবর্ষে এমন অনেক পরিবার রয়েছে যার সন্তান মেধাবী হওয়ার সত্ত্বেও উচ্চশিক্ষা গ্রহণে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে আর্থিক সমস্যা। আর এরকম সমস্যা সমাধানের জন্য ভারত সরকার সহ বিভিন্ন ধরনের বেসরকারি সংস্থাও একের পর এক আর্থিক সহায়তা করনের জন্য না ধরনের স্কলারশিপ নিয়ে এসেছেন। আজকের প্রতিবেদনে তেমনে এক স্কলারশিপের কথা বলতে যাচ্ছি যার মাধ্যমে মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীরা এককালীন ভালো আর্থিক সাহায্য পেতে পারেন।
প্রতিবছরের মতো এবারও এইচডিএফসি ব্যাংকের ইসিএসএস স্কলারশিপ মূলত ‘Merit cum Need’ ভিত্তিতে প্রদান করা হচ্ছে। অর্থাৎ যেসব শিক্ষার্থী পড়াশোনায় ভালো এবং একইসঙ্গে আর্থিকভাবে পিছিয়ে আছেন, তারা এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে পারবেন। শিক্ষার্থীর পরিবারিক বার্ষিক আয় ২.৫ লক্ষ টাকার কম হতে হবে, এবং আবেদনকারীর সর্বশেষ পরীক্ষায় কমপক্ষে ৫৫ শতাংশ নম্বর থাকতে হবে। তাছাড়া, যেসব পরিবার গত তিন বছরের মধ্যে বড় কোনো আর্থিক বা পারিবারিক সংকটে পড়েছে, যেমন পরিবারের উপার্জনক্ষম সদস্যের মৃত্যু, মারাত্মক অসুস্থতা, প্রাকৃতিক বিপর্যয় বা চাকরি হারানোর মতো সমস্যার মুখে পড়েছে, তাদের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
এই স্কলারশিপ স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য দুই ভাগে বিভক্ত। প্রথম থেকে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের জন্য সর্বোচ্চ ₹১৫,০০০ পর্যন্ত অনুদান প্রদান করা হবে। সপ্তম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি বা আইটিআই, ডিপ্লোমা ও পলিটেকনিক কোর্সের জন্য দেওয়া হবে ₹১৮,০০০ পর্যন্ত অনুদান।
স্নাতক পর্যায়ে যাঁরা সাধারণ কোর্স যেমন বি.এ., বি.কম, বি.এসসি বা বিএসসি করছেন, তারা পাবেন সর্বোচ্চ ₹৩০,০০০। অন্যদিকে, যাঁরা পেশাগত কোর্স যেমন বি.টেক, এমবিবিএস, নার্সিং, এলএলবি বা আর্কিটেকচার করছেন, তাদের জন্য বরাদ্দ ₹৫০,০০০ পর্যন্ত।
স্নাতকোত্তর পর্যায়েও দুটি ভাগে স্কলারশিপ বরাদ্দ করা হয়েছে। সাধারণ কোর্সের জন্য যেমন এমএ বা এমকম, সর্বোচ্চ ₹৩৫,০০০ পর্যন্ত এবং পেশাগত কোর্স যেমন এমবিএ বা এমটেক-এর জন্য বরাদ্দ ₹৭৫,০০০ পর্যন্ত।
এই পুরো প্রক্রিয়াটি অনলাইনে পরিচালিত হচ্ছে Buddy4Study পোর্টালের মাধ্যমে। আবেদন করতে শিক্ষার্থীদের সেই ওয়েবসাইটে গিয়ে “Apply Now” বোতামে ক্লিক করে নিজস্ব একাউন্ট তৈরি করতে হবে বা পূর্বের একাউন্টে লগইন করে আবেদন ফর্ম পূরণ করতে হবে। আবেদনকারীদের অবশ্যই কিছু গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট প্রস্তুত রাখতে হবে, যেমন আগের বছরের মার্কশিট, বর্তমান শিক্ষাবর্ষের ভর্তি সংক্রান্ত প্রমাণ (যেমন ফি রশিদ, বোনাফাইড সার্টিফিকেট বা আইডি কার্ড), পরিচয়পত্র (আধার, ভোটার আইডি বা ড্রাইভিং লাইসেন্স), পারিবারিক আয় সংক্রান্ত প্রমাণপত্র এবং প্রয়োজনে পারিবারিক সংকটের প্রমাণ।
এখানে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো স্কলারশিপ প্রক্রিয়ায় নির্বাচনের ধাপ। প্রথমে যোগ্যতাভিত্তিক শর্টলিস্টিং, এরপর ডকুমেন্ট যাচাই এবং সবশেষে নির্বাচিত প্রার্থীদের ইন্টারভিউ নেওয়া হবে। ইন্টারভিউয়ের পরে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে, যেখানে বাছাইকৃত শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ প্রদান করা হবে।
এই স্কলারশিপ শুধুমাত্র অর্থ সাহায্য নয়, এটি শিক্ষার্থীদের জন্য ভবিষ্যতের প্রতি একটি আশার আলো। অনেক সময় শুধুমাত্র আর্থিক অনটনের কারণে বহু প্রতিভাবান ছাত্রছাত্রী মাঝপথে পড়াশোনা ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। এইচডিএফসি ব্যাংক তাদের এই প্রকল্পের মাধ্যমে এমন পরিস্থিতি প্রতিরোধ করার জন্যই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, এই স্কলারশিপ প্রক্রিয়ার সময়সীমা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আবেদনকারীদের ৩১ আগস্ট ২০২৫-এর মধ্যে আবেদনপত্র জমা দিতে হবে। এরপরে আবেদনপত্র গৃহীত হবে না, তাই আগ্রহী শিক্ষার্থীদের যেন নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ফেলেন, সে বিষয়ে সচেতন থাকা দরকার।
যে কোনো জিজ্ঞাসা বা সমস্যার জন্য শিক্ষার্থীরা সরাসরি Buddy4Study-এর সহায়তা কেন্দ্রে যোগাযোগ করতে পারেন। এছাড়া অফিশিয়াল ইমেল বা ফোন নম্বরেও তাদের সহায়তা নেওয়া যাবে।
যারা ভারতবর্ষে মেধাবী এবং এইচডিএফসি ব্যাংকের এই স্কলারশিপ প্রোগ্রামে নিজেকে নিযুক্ত করতে চান এবং নিজের উপযুক্ত যোগ্যতা রয়েছে তাদের জন্য এই স্কলারশিপ হতে চলেছে এক গেম চেঞ্জার। কেননা এর মাধ্যমে আপনি আবেদন করলেই পেয়ে যাবেন দারুন সুযোগ। একবার সুযোগ পেয়ে গেলে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণে আর কোন বাধা থাকবে না। আপনি যদি এই স্কলারশিপ নিতে আগ্রহী হন এবং সমস্ত যোগ্যতা পরিপূর্ণ করেন তাহলে এখনই আবেদন করে ফেলুন।